করোনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে শিক্ষকদের এক দিনের বেতন ও বেসিকদের ভাবনা
করোনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বেসরকারি শিক্ষকদের এক দিনের বেতন ও বেসিকদের ভাবনা
হ্যাঁ পারি। আমরাই পারি এবং কেবল আমরাই পারি। আমরাই পারি অন্তর উজাড় করে ‘করোনা’ মোকাবেলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে আমাদের প্রাপ্ত অনুদানের ছোট একটি অংশ তুলে দিতে।
এতবার ‘পারি’ কেন বললাম?বললাম এই কারণে, করোনা মোকাবেলায় সামান্য আর্থিক সহোযোগিতার বিষয়টি জোর করে কর্তন না করে সাহস করে আমাদের উপর ছেড়ে দিয়ে আজ আমাদের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপণে ‘আগ্রহী’ কথাটি উল্লেখ করে আমাদের বিবেক যাচাই করা হয়েছে, যাচাই করা হয়েছে মানবতাবোধ।
কিন্তু আমাদের কাছে ‘বিবেক’ যাচাই করার দায়িত্ব দিলে কিছু পুরনো প্রসঙ্গ এসেই পড়ে।
তার আগে, আমার বারবার ‘পারি’ কথাটা বলার অর্থটা একটু পরিষ্কার না করলে দম্ভোক্তি হয়ে যায়। যে দম্ভ একজন শিক্ষাগুরুর লেখনীতে শোভা পায় না।তারপরও কেন বলেছি?আজকের এই দূর্যোগ প্রাক্কালে কথাগুলো শুনতে হয়তো ভালো লাগবে না। তবুও বলছি, রাষ্ট্রের বিবেক যেন আমাদের জন্য কোমলতায় পূর্ণ হয়ে ওঠে সেই কারণে।
১. বেসরকারি শিক্ষকরা সর্বাপেক্ষা কম বেতনে দিনাতিপাত করেও জাতির স্বার্থে হাসতে হাসতে আয়কর প্রদান করে থাকেন। তার অন্তরে লুকানো থাকে ঋণের টাকা পরিশোধের সীমাহীন চাপা কান্না।
২. নামেমাত্র চিকিৎসা ভাতায় রুগ্ন বাবা-মায়ের চিকিৎসা না করিয়ে, নিজে অসুস্থ থেকে সমাজে অসুখ সারানোর কাজটি আমরাই সম্পাদন করে থাকি।
৩. জাতির স্বার্থে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটি ভোগ না করে শিক্ষকরাই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করে থাকেন।
আর আজ জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সামান্য ত্যাগটুকু করতে পারবো না? নিশ্চয় পারবো।
৪. উৎসব দিনে শুকনো কচি নিরাস মুখগুলোর দিকে অপলোক তাকিয়ে থাকা জলভরা চোখগুলো আমাদের।
৫. উপরে ওঠার সিঁড়িতে পিছলে যাওয়া মাটিশূণ্য অনিশ্চয়তার পাগুলো আমাদেরই।
তবুও দৈন্যতা আমাদের স্পর্শ করেনি, করবে না কখনও।
জানি, আজ একথা বলার সময় নয়,তবুও বলতে হচ্ছে, দেওয়ার বেলায় অন্তর উজাড় করে সবটুকু দিতে না পারা ব্যথাটা জেগে ওঠে বলে। দেবো, যা সামর্থ্য আছে অন্তর উজাড় করে আজ তাই দেবো। জাতির এ দুঃসময়ে আমরা সামান্যতম সহযোগিতা করতে পেরে শিক্ষক হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আর ভালো লাগছে এই ভেবে সরকার আমাদের উপর দায়িত্বটি ছেড়ে দিয়ে আমাদের মর্যাদা রক্ষা করেছেন বলে।
হ্যাঁ পারি। আমরাই পারি। আমারাও দিতে চাই, জাতির জন্যে অকাতরে দিতে চাই। দিয়ে ধন্য হতে চাই।
জয়ন্ত কুমার ঢালী
প্রধান শিক্ষক
জয়নগর পিপুলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
রামপাল, বাগেরহাট।
গঠনমূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যূতে লিখতে পারেন আপনিও। আপনার লেখা প্রকাশ হবে লক্ষাধিক গ্রাহকের প্রিয় ওয়েবসাইট বাংলা নোটিশ ডট কম এর পাঠকের কলামে।
আমাদের ফেসবুক পেইজে ও গ্রুপে যোগ দিন।
ফেসবুক গ্রুপ: যোগদিন
ফেসবুক পেইজ: যোগদিন